বিগত কয়েক দশক ধরে যে সমস্ত সাহিত্যিকেরা নিরবিচ্ছিন্নভাবে গল্প এবং উপন্যাস লিখে চলেছেন এবং স্ব স্ব লিখন বৈশিষ্ট্যে সাহিত্য পাঠকদের কাছে হয়ে উঠেছেন সুপরিচিত তাঁদের মধ্যে একজন হলেন প্রফুল্ল রায়। পঞ্চাশের দশক থেকে তাঁর লেখালেখি শুরু।
জন্ম পরিচয় :
জন্ম ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে ১১ ই সেপ্টেম্বর অবিভক্ত ঢাকা শহরের বিক্রমপুরে। কিন্তু দেশভাগের পর কলকাতায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য চলে আসেন।
পেশা: রতিনি পেশায় সাংবাদিক ছিলেন। সাংবাদিকতার সূত্রে তিনি ভারতের নানা স্থানে ঘুরে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছিলেন,সেই সব অভিজ্ঞতা তাঁর সাহিত্য রচনায় বিশেষভাবে কার্যকারী হয়েছে।
লেখার বৈশিষ্ট্য :
১।মধ্যবিত্ত জীবনের ছবি ফুটে উঠেছে। উচ্চবিত্ত শ্রেণি ও মাঝে মাঝে তাঁর লেখায় স্থান পেয়েছে। সেই সঙ্গে দরিদ্র ও অতিদরিদ্র মানুষকে তিনি নিবিড়ভাবে মূর্ত করেন তাঁর লেখায়।
২।তাঁর গল্প ও উপন্যাসে ব্যক্তি মানুষ তার ব্যক্তিত্বের যাবতীয় সঙ্কচ নিয়ে প্রতিভাত হয়।
৩।তাঁর লেখায় বিশেষ বিশেষ স্থানের ভৌগলিক অবস্থান, জীবিকা, খাদ্যাভাস, সেই অঞ্চলের সংলাপ ফুটে উঠেছে।
উপন্যাস : তাঁর প্রথম উপন্যাস "পূর্বপার্বতী" (১৯৫৭)।দেশ পত্রিকায় ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত।অন্যান্য উপন্যাস গুলি হল-
১।"সিন্ধুপারের পাখী" (১৯৫৯)
২।"কেয়াপাতার নৌকা"( ১ম খন্ড১৯৬৯,২য় খন্ড ১৯৭০)
৩।জন্মভূমি ১৯৭১
৪।ভাতের গন্ধ ১৯৮১
৫।আকাশের নীচে মানুষ ১৯৮১
৬।মানুষের যুদ্ধ ১৯৮৩
৭।ধর্মান্তর ১৯৮৪
৮।রামচরিত্র ১৯৮৫
৯।নোনা জল মিঠে মাটি
১০।যুদ্ধযাত্রা
১১।মহাযুদ্ধের ঘোড়া
১২।মন্দমেয়ের উপাখ্যান
১৩।শান্তি পর্ব
১৪।চরিএ
১৫।ক্রান্তিকাল
১৬।ইস্পাতের ফলা
১৭।অন্ধকারে ফুলের গন্ধ
১৮।আমাকে দেখুন
১৯।মানবজীবন
২০।মানুষের অধিকার
২১।শতধারায় বয়ে যায়
২২।কখণ সূর্য ওঠে
২৩।দুই দিগন্ত
২৪।পিতৃভূমি
২৫।সুখ দুঃখের সীমা
২৬।জলের রেখা
২৭।শতবর্ষের যুদ্ধ
২৮।আলোয় আঁধারে মেশা
২৯।আবিষ্কার
৩০।একাকী অরণ্যে
৩১।রৌদ্রঝলক
৩২।একজন পলাতকের কাহিনি ,ইত্যাদি।
ছোটগল্প :
তাঁর প্রথম ছোটগল্প মাঝি ১৯৫৪ দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। অন্যান্য গল্প গুলি হল -স্বপ্নের ট্রেন, রাজ্য যায় রাজা আসে, চর, ইত্যাদি।
পুরস্কার :
"আকাশের নীচে মানুষ "(১৮৯১)উপন্যাসের জন্য বঙ্কিম পুরস্কার (১৯৮৫) এবং রামকুমার ভূয়ালকা পুরস্কার পেয়েছেন।
"ক্রান্তিকাল"(১৯৯৮)উপন্যাসের জন্য তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার (২০০৩) পেয়েছেন ।এই উপন্যাস অবলম্বনে শেখর দাস "ক্রান্তিকাল"নামে একটি সিনেমা করেন (২০০৫)।সিনেমাটি জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত।
আলোচক – সুপর্ণা রক্ষিত
(সদস্য Success বাংলা)