ব্যাকরণ কী?
ভাষার সংবিধান বলা হয় ব্যাকরণকে। ব্যাকরণ শব্দটির বুৎপত্তি হয়েছে- (বি + আ + কৃ + অন)। ব্যাকরণ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিশেষভাবে বিশ্লেষণ । ভাষাকে বিশ্লেষণ করাই ব্যাকরণের কাজ। বিভিন্ন ভাষাবিদ বিভিন্ন ভাবে ব্যাকরণের সংজ্ঞা দিয়েছেন।
ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে - "যে বিদ্যার দ্বারা কোনো ভাষাকে বিশ্লেষণ করিয়া তাহার স্বরূপটি আলোচিত হয় এবং ভাষার পঠনে ও লিখনে এবং তাহাতে কথোপকথনে শদ্ধরূপে তাহার প্রয়োগ করা যায়, সেই বিদ্যাকে সেই ভাষার ব্যাকরণ বলে। অথবা যে শাস্ত্রে কোন ভাষাকে বিশ্লেষণ করিয়া তাহার স্বরূপ, প্রকৃতি ও প্রয়োগনীতি বুঝাইয়া দেওয়া হয়, সেই শাস্ত্রকে বলে সেই ভাষার ব্যাকরণ।"
ডঃ সুকুমার সেনের মতে - "কোন ভাষার উপাদান সমগ্রভাবে বিচার বিশ্লেষণ যে বিদ্যার বিষয় তাহাকে সেই ভাষার ব্যাকরণ বলে।"
অর্থাৎ আমরা বলতে পারি -- যে নিয়মে ভাষা সুন্দর, শুদ্ধ ও শৃংখলাবদ্ধ করা যায় এবং ভাষার স্বরূপ, প্রকৃতি ও প্রয়োগরীতি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায় তাকেই ব্যাকরণ বলে।
বাংলা_ব্যকরণ
ডঃ সুকুমার সেন বাংলা ব্যকরণের সংজ্ঞা দিয়েছেন- "যে শাস্ত্রে বাংলা ভাষার স্বরূপ ও প্রকৃতির বিচার ও বিশ্লেষণ এবং যে শাস্ত্রে জ্ঞান থাকলে বাংলা ভাষা শুদ্ধরূপে বলতে, লিখতে ও শিখতে পারা যায় তাকে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ সংক্ষেপে বাংলা ব্যাকরণ বলে।"
জ্যোতিভূষণ চাকী বলেছেন- "যে ব্যাকরণ বাংলাভাষার ধ্বনি, শব্দ, পদ ও বাক্য ইত্যাদির বিশ্লেষণ করে ভাষার স্বরূপটিকে তুলে ধরে তাকেই আমরা বাংলা ব্যাকরণ বলতে পারি।"
অর্থাৎ যে নিয়মের মাধ্যমে বাংলাভাষাকে সুন্দর, শুদ্ধ ও শৃংখলাবদ্ধ করা যায় সেই নিয়মকেই আমরা বাংলা ব্যাকরণ বলি।
ব্যাকরণের প্রকারভেদ:
ব্যাকরণ প্রধাণত চার প্রকার।
১) বর্ণনাত্মক ব্যাকরণ
২) ঐতিহাসিক ব্যাকরণ
৩) তুলনামূলক ব্যাকরণ
৪) দার্শনিক বিচারমূলক ব্যাকরণ।
# বর্ণনাত্মক ব্যাকরণ: বিশেষ কোনো কালের কোনো একটি ভাষার রীতি ও প্রয়োগ বর্ণনা করা এর বিষয় এবং সে বিশেষ কালের ভাষা যথাযথ ব্যবহার করতে সাহায্য করা এর উদ্দেশ্য।
ঐতিহাসিক ব্যাকরণ: আধুনিক বা কোনো নির্দিষ্ট যুগের ভাষাগত প্রয়োগরীতি আলোচনা করে আলোচ্য ভাষার রূপটির বিকাশের ইতিহাস পর্যালোচনা করা এর লক্ষ্য।
তুলনামূলক ব্যাকরণ: যে শ্রেণীর ব্যাকরণ কোনো বিশেষ কালের বিভিন্ন ভাষার গঠন, প্রয়োগরীতি ইত্যাদির তুলনামূলক আলোচনা করে থাকে, তা-ই তুলনামূলক ব্যাকরণ।
দার্শনিক বিচারমূলক ব্যাকরণ: ভাষায় অন্তর্নিহিত চিন্তা প্রণালীটি আবিষ্কার ও অবলম্বন করে সাধারণভাবে কিংবা বিশেষভাবে ভাষার রূপের উৎপত্তি ও বিবর্তন কীভাবে ঘটে থাকে, তার বিচার করা এর পর্যায়ভুক্ত।।
ঐতিহাসিক ব্যাকরণ: আধুনিক বা কোনো নির্দিষ্ট যুগের ভাষাগত প্রয়োগরীতি আলোচনা করে আলোচ্য ভাষার রূপটির বিকাশের ইতিহাস পর্যালোচনা করা এর লক্ষ্য।
তুলনামূলক ব্যাকরণ: যে শ্রেণীর ব্যাকরণ কোনো বিশেষ কালের বিভিন্ন ভাষার গঠন, প্রয়োগরীতি ইত্যাদির তুলনামূলক আলোচনা করে থাকে, তা-ই তুলনামূলক ব্যাকরণ।
দার্শনিক বিচারমূলক ব্যাকরণ: ভাষায় অন্তর্নিহিত চিন্তা প্রণালীটি আবিষ্কার ও অবলম্বন করে সাধারণভাবে কিংবা বিশেষভাবে ভাষার রূপের উৎপত্তি ও বিবর্তন কীভাবে ঘটে থাকে, তার বিচার করা এর পর্যায়ভুক্ত।।