প্রহসন:: উৎস থেকে অবক্ষয় --
ইংরেজি farce শব্দের প্রতিশব্দ রূপে আমরা 'প্রহসন' শব্দটিকে গ্রহণ করে থাকি । ল্যাটিন farcita থেকে ইংরেজি farce শব্দের উদ্ভব । farcita শব্দটি এসেছে farcio থেকে ; যার অর্থ .. বাজে কথায় নিম্নস্তরের ভাঁড়ামি । সুতরাং সে অর্থ ধরলে farce বা প্রহসন বলা হবে সেই নাটিকাকে - - যাতে স্বল্পায়তনের মধ্যে স্হূল রুচি সম্পন্ন লঘু হাস্যরসের প্রকাশ ঘটে । হীরেনবাবু বা কুন্তলবাবুর এ বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা আছে বোধকরি ।
চিরকালীন সাহিত্য সৃষ্টির অনুপ্রেরণায় সাহিত্যিকরা যা সৃষ্টি করেন তা সমকালের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও ; সমকাল অতিক্রমী । জীবনের সুন্দর দিকগুলিই সাহিত্যের অবলম্বন । জীবনের আলোকিত পথেই তার পদবিক্ষেপ । কিন্তু প্রহসন জীবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকটি ফুটিয়ে তোলে এবং তার থেকে উত্তরণে অনুপ্রাণিত করে ।
♦বাংলা প্রহসনের উদ্ভব ও বিস্তার :-
প্রথম বাংলা প্রহসন কোনটি ? বলা মুশকিল । 'কাল্পনিক সংবদল'কে কেউ কেউ প্রহসন বলছেন । ১৭৯৫ সালের ২৭ শে নভেম্বর আজকের এজরা স্ট্রীটে ( পূর্বতন ডোমতলা স্ট্রীট ) ' কাল্পনিক সংবদল' প্রথম অভিনীত হয় ।
আধুনিক যুগ সমস্যা নিয়ে প্রহসন রচিত হতে শুরু করে উনিশ শতকের মধ্যভাগে । ১৮২২ সালে জগদীশ রচিত 'হাস্যার্ণব ' এবং ১৮২৮ সালে রামচন্দ্র তর্কালঙ্কারের 'কৌতুক সর্বস্ব ' বাংলা প্রহসনের পশ্চাৎপট তৈরি করেছে । এছাড়া পঞ্চানন বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'রমণী নাটক' কালীপ্রসন্নের 'বাবু' বিষয়ের দিক থেকে আধুনিক প্রহসনের নান্দী পাঠ করেছে ।
♦বাংলা প্রহসনের পূর্বাভাষ--
কালীপ্রসন্নের 'বাবু' নাটিকায় পাওয়া গেলেও রামনারায়ণ তর্করত্নই প্রকৃতপক্ষে বাংলা প্রহসনের পথ নির্মাতা । বাংলা সাহিত্যে সমাজচিত্র অঙ্কণের যে রেওয়াজ শুরু হয়েছিল ভবানীচরণের 'নববাবু বিলাস ' (১৮২৫) , নববিবি বিলাস , কলিকাতা কমলালয় .. প্রভৃতি গ্রন্থে । আসলে ' আলালের ঘরের দুলাল ' এবং 'হুতোম প্যাঁচার নকশা ' যে মানসিকতার ফসল ; রামনারায়ণের 'কুলীনকুল সর্বস্ব ' (১৮৫৪) সেই মানসিকতারই ফসল ।
এছাড়াও 'যেমন কর্ম তেমনি ফল ' উভয় সংকট , প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা ।
♦ মধুসূদন এবং বাংলা প্রহসনের রাজপথ--
বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন , উনিশ শতকের নবজাগরণের প্রভাবপুষ্ট মধুসদন দত্ত । দুটি মাত্র প্রহসন তিনি রচনা করেছিলেন ' বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ ' এবং ' একেই কি বলে সভ্য্যতা ' । সংখ্যার বিচারে দুটি হলেও এর মধ্যেই তিনি সৃষ্টি করলেন হাস্যরসের আধারে যুগচিত্র নির্মাণের কলাবিধি-সম্মত কৌশল । বলতে গেলে , তাঁর সৃষ্ট রাজপথেই পরবর্তীকালের প্রহসনকারদের গতিময় সোনার রথে বিজয়যাত্রা ।
♦আলোচক-- কমলাকান্ত টু ♦
♦পথপ্রদর্শক সাকসেস বাংলা♦
ইংরেজি farce শব্দের প্রতিশব্দ রূপে আমরা 'প্রহসন' শব্দটিকে গ্রহণ করে থাকি । ল্যাটিন farcita থেকে ইংরেজি farce শব্দের উদ্ভব । farcita শব্দটি এসেছে farcio থেকে ; যার অর্থ .. বাজে কথায় নিম্নস্তরের ভাঁড়ামি । সুতরাং সে অর্থ ধরলে farce বা প্রহসন বলা হবে সেই নাটিকাকে - - যাতে স্বল্পায়তনের মধ্যে স্হূল রুচি সম্পন্ন লঘু হাস্যরসের প্রকাশ ঘটে । হীরেনবাবু বা কুন্তলবাবুর এ বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা আছে বোধকরি ।
চিরকালীন সাহিত্য সৃষ্টির অনুপ্রেরণায় সাহিত্যিকরা যা সৃষ্টি করেন তা সমকালের প্রেক্ষাপটে রচিত হলেও ; সমকাল অতিক্রমী । জীবনের সুন্দর দিকগুলিই সাহিত্যের অবলম্বন । জীবনের আলোকিত পথেই তার পদবিক্ষেপ । কিন্তু প্রহসন জীবনের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিকটি ফুটিয়ে তোলে এবং তার থেকে উত্তরণে অনুপ্রাণিত করে ।
♦বাংলা প্রহসনের উদ্ভব ও বিস্তার :-
প্রথম বাংলা প্রহসন কোনটি ? বলা মুশকিল । 'কাল্পনিক সংবদল'কে কেউ কেউ প্রহসন বলছেন । ১৭৯৫ সালের ২৭ শে নভেম্বর আজকের এজরা স্ট্রীটে ( পূর্বতন ডোমতলা স্ট্রীট ) ' কাল্পনিক সংবদল' প্রথম অভিনীত হয় ।
আধুনিক যুগ সমস্যা নিয়ে প্রহসন রচিত হতে শুরু করে উনিশ শতকের মধ্যভাগে । ১৮২২ সালে জগদীশ রচিত 'হাস্যার্ণব ' এবং ১৮২৮ সালে রামচন্দ্র তর্কালঙ্কারের 'কৌতুক সর্বস্ব ' বাংলা প্রহসনের পশ্চাৎপট তৈরি করেছে । এছাড়া পঞ্চানন বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'রমণী নাটক' কালীপ্রসন্নের 'বাবু' বিষয়ের দিক থেকে আধুনিক প্রহসনের নান্দী পাঠ করেছে ।
♦বাংলা প্রহসনের পূর্বাভাষ--
কালীপ্রসন্নের 'বাবু' নাটিকায় পাওয়া গেলেও রামনারায়ণ তর্করত্নই প্রকৃতপক্ষে বাংলা প্রহসনের পথ নির্মাতা । বাংলা সাহিত্যে সমাজচিত্র অঙ্কণের যে রেওয়াজ শুরু হয়েছিল ভবানীচরণের 'নববাবু বিলাস ' (১৮২৫) , নববিবি বিলাস , কলিকাতা কমলালয় .. প্রভৃতি গ্রন্থে । আসলে ' আলালের ঘরের দুলাল ' এবং 'হুতোম প্যাঁচার নকশা ' যে মানসিকতার ফসল ; রামনারায়ণের 'কুলীনকুল সর্বস্ব ' (১৮৫৪) সেই মানসিকতারই ফসল ।
এছাড়াও 'যেমন কর্ম তেমনি ফল ' উভয় সংকট , প্রভৃতি তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনা ।
♦ মধুসূদন এবং বাংলা প্রহসনের রাজপথ--
বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন শাখার দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন , উনিশ শতকের নবজাগরণের প্রভাবপুষ্ট মধুসদন দত্ত । দুটি মাত্র প্রহসন তিনি রচনা করেছিলেন ' বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ ' এবং ' একেই কি বলে সভ্য্যতা ' । সংখ্যার বিচারে দুটি হলেও এর মধ্যেই তিনি সৃষ্টি করলেন হাস্যরসের আধারে যুগচিত্র নির্মাণের কলাবিধি-সম্মত কৌশল । বলতে গেলে , তাঁর সৃষ্ট রাজপথেই পরবর্তীকালের প্রহসনকারদের গতিময় সোনার রথে বিজয়যাত্রা ।
♦আলোচক-- কমলাকান্ত টু ♦
♦পথপ্রদর্শক সাকসেস বাংলা♦