স্বপ্নময় চক্রবর্তী : আধুনিক যুগের লেখক

¤ স্বপ্নময় চক্রবর্তী : আধুনিক যুগের লেখক ¤
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
         (২৪ আগস্ট, ১৯৫১ - এখনও জীবিত)

 তিনি হলেন একজন খ্যাতনামা বাঙালি সাহিত্যিক।

¤ জন্ম ও জন্মস্থান :-
স্বপ্নময় চক্রবর্তী পশ্চিমবঙ্গের উত্তর কলকাতায় ১৯৫১ সালের ২৪ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন।

¤ পেশা :- ছোটগল্পকার, ঔপন্যাসিক, কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক, কলাম লেখক।

¤ শিক্ষাজীবন :-
স্কুল-কলেজে বিজ্ঞানের ছাত্র। তিনি রসায়নে বি. এস. সি (সম্মান), বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ, সাংবাদিকতায় ডিপ্লোমা করেছেন। এছাড়া সংস্কৃত চতুষ্পদীও শিখেছেন।

¤ কর্মজীবন :-
দেশলাই-এর সেলসম্যান হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। নানা জীবিকা বদলে আকাশবাণীর সঙ্গে যুক্ত হন।

¤ সাহিত্যজগতে আত্মপ্রকাশ :-
মাত্র ২১ বছর বয়সে ১৯৭২ সালে তাঁর প্রথম গল্প 'অমৃত' পত্রিকায় প্রকাশের মধ্য দিয়ে তিনি সাহিত্যজগতে আত্মপ্রকাশ করেন।

¤ সাহিত্যকর্ম :-
স্বপ্নময় মূলত ছোটগল্পকার হিসেবে বাংলা সাহিত্য জগতে সুনাম অর্জন করেন। তবে বহু উপন্যাস, প্রবন্ধ ও কলাম লিখিয়ে হিসেবেও তাঁর খ্যাতি আছে।
সত্তর দশুকের মাঝামাঝি থেকে লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৭২ সালে তাঁর প্রথম গল্প 'অমৃত' পত্রিকায় প্রকাশিত হলেও ছোট পত্র-পত্রিকাতেই লিখেছেন বেশি। প্রথম গল্প সংকলন 'ভূমিসূত্র' প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮২ সালে। প্রথম উপন্যাস 'চতুষ্পাঠী' প্রকাশিত হয় 'আনন্দবাজার' পত্রিকার 'পূজা' সংখ্যায় ১৯৯২ সালে। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশিষ্ঠ লেখকরূপে চিহ্নিত হয়েছিলেন।

¤ ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্য :-
গ্রামীণ জীবন ও গ্রামীণ পরিবেশ স্বপ্নময়ের গল্পে যথাযথ ভাবে উপস্থিত হয়েছে। সাহিত্য বলতে স্বপ্নময় বোঝেন --- 'প্রত্যাশা, আর্তি, অপেক্ষা, উপেক্ষা, বিষাদ, বেদনা, সবই এক-একটা নকশার জন্ম দেয়। অক্ষরে অক্ষরে এসব কথা লিখে রাখার ব্যর্থ চেষ্টার নামই সাহিত্য।' গ্রামীণ সংস্কার-বিশ্বাস, অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে 'স্বস্ত্যয়ন', 'অষ্টচরণ ষোলো হাঁটু', 'ঝড়ে কাক মরে' প্রভৃতি গল্পে। মানুষ ও সমাজকে তিনি ধর্মের চেয়ে বড়ো করে দেখিয়েছেন 'ধর্ম' গল্পে।

¤ গল্পগ্রন্থ ও গল্পসংকলন :- তাঁর কয়েকটি স্মরণীয় গল্পগ্রন্থ ও গল্পসংকলন হল :-
১) 'ভূমিসূত্র' (১৯৮২)
২) 'অষ্টচরণ ষোল হাঁটু' (১৯৮৬)
৩) 'ভিডিও-ভগবান-নকুলদানা' (১৯৯২)
৪) 'জার্সি গরুর উল্টোবাচ্চা' (১৯৯৪)
৫) 'স্বপ্নময় চক্রবর্তীর গল্প' (১৯৯৫)
৬) 'সতর্কতামূলক রূপকথা' (১৯৯৭)
৭) 'কৃষ্ণা গিরিবালা ও অন্যান্য' (১৯৯৯)
৮) 'সত্যিকারের স্বপ্ন ও সনাতনের গল্প' (২০০০)
৯) 'চমক চম্পু ও অন্যান্য হাসির গল্প' (২০০১)
১০) 'ফুল ছোঁয়ানো' (২০০২)
১১) 'পাউডার কৌটোর টেলিস্কোপ'
১২) 'সেরা ৫ টি গল্প'
১৩) 'পঞ্চাশটি গল্প'
১৪) 'ভেজা বারুদ'
১৫) 'দুনিয়াদারি'
১৬) 'শ্রেষ্ঠ গল্প'
১৭) 'পরবাসী'
১৮) 'অনুগল্প সংগ্রহ'

¤ উপন্যাস :- তাঁর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হল :-
১) 'চতুষ্পাঠী' (১৯৯২)
২) 'নবম পর্ব' (১৯৯৭)
৩) 'চল দুবাই' (২০০২)
৪) 'অবন্তীনগর' (২০০২)
৫) 'হলদে গোলাপ'
৬) 'পাঁচটি উপন্যাস'

¤ ইংরেজি গ্রন্থ :- তাঁর উল্লেখযোগ্য দুটি ইংরেজি গ্রন্থ হল :-
১) 'The girl who wished to be alluring and other stories'
২) 'Tampa And The Sparrows'

¤ 'হলদে গোলাপ' উপন্যাস :-
সমাজের শরীর ও শরীরের সমাজতত্ত্ব নিয়ে এক দুঃসাহসিক উপন্যাস এই 'হলদে গোলাপ'। ২০১২-১৩ সাল জুড়ে প্রয়াত ঋতুপর্ণ ঘোষ সম্পাদিত 'রোববার'-এ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশকালে পাঠকসমাজ আলোড়িত হয় - যা খুব কম উপন্যাসের ক্ষেত্রেই ঘটে। কাহিনী বয়নে মানুষের লিঙ্গ পরিচয়ের সমস্যা তুলে আনতে গিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রমে খুঁজেছেন ইতিহাস, নৃ-বিজ্ঞান, সমাজতত্ত্ব, শারীরবিজ্ঞান, মনস্তত্ত্ব, জিনেটক্স, মিথ পুরাণ। এক বিশিষ্ট সমালোচক বলেছিলেন, 'স্বপ্নময়ের গল্প আমাদের শেকড় খোঁজার কোদাল।'
                ঐ উক্তিটির কথা মনে পড়বে উপন্যাসটি পড়তে পড়তে। এই উপন্যাসটিতে আসলে এক সংকট সংকুল মানুষের অনুভূতিগুলি চিত্রিত হয়েছে আশ্চর্য মায়াময় দক্ষতায়। কাহিনীর পরতে পরতে মিশে আছে বৈজ্ঞানিক তথ্যাবলী। শুধু বাংলা সাহিত্য কেন, সমগ্র ভারতীয় সাহিত্যে এর আগে এভাবে কোন উপন্যাস লেখা হয় নি।

¤ তাঁর সম্পর্কে মন্তব্য :-
সুবল সামন্ত সম্পাদিত 'বাংলা গল্প ও গল্পকার' গ্রন্থে অরুণ কুমার ঘোষ বলেছেন, --- 'তাঁর গল্পের থীম হিসেবে প্রাধান্য পায় শোষণ, বঞ্চনা, গ্রাম-নগরের সমাজ-জীবনে ও রাজনীতিতে ব্যাপক দুর্নীতি, সমাজ-পরিবেশের অবক্ষয়ে ব্যক্তি চরিত্রের বিনষ্টি, মধ্যবিত্ত নিবীর্যতা ও সুবিধাবাদ, মুনাফার সর্বগ্রাসী লোভ, পার্থিব সাফল্য লাভের নির্বিবেক লোলুপতা, স্বপ্নময় গ্রামীণ পরিমণ্ডলের বাস্তবতাকে সজীব সানুপুঙ্খতায় উপস্থাপন করেছেন, অবিরত ব্যবহার করেছেন গ্রামীণ ভাষার সংলাপ।'

¤ স্বপ্নময় চক্রবর্তীর সাক্ষাৎকার:-
১৯৭৮ সালে ‘প্রমা’ নামে একটি পত্রিকা আত্মপ্রকাশ করে। সম্পাদকমণ্ডলীতে কয়েকটি নক্ষত্র— অরুণ মিত্র, শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, পবিত্র সরকার। কার্যকরী সম্পাদক সুরজিৎ ঘোষ। এখন অরুণ মিত্র ও সুরজিৎ ঘোষ প্রয়াত। প্রথম সংখ্যাটি থেকেই পত্রিকাটিছিল বেশ উঁচু মানের। মহাশ্বেতা দেবী, শঙ্খ ঘোষ, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত, সৌরীন ভট্টাচার্য, শিশিরকুমার দাশরা এই পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। এক দিন সুরজিৎ ঘোষের চিঠি পেলাম। বলছেন — এই পত্রিকায় গল্প লিখতে হবে।
আমি আহ্লাদিত। ওই পত্রিকায় গল্পও ছাপা হতে দেখেছি। মহাশ্বেতা দেবী, মতি নন্দী, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ছাড়াও জয়ন্ত জোয়ারদার, সাধন চট্টোপাধ্যায়, কল্যাণ মজুমদারদের গল্প দেখেছি। ওঁদের সঙ্গে আমিও? এর আগে পাঁচ-সাতটার বেশি গল্প লিখিনি। প্রথম বইটির কথা বলতে গিয়ে প্রথম লেখাটার কথাও একটু বলতে হয়। ১৯৭২ সালে আমার প্রথম গল্প ছাপা হয় ‘অমৃত’ পত্রিকায়। মণীন্দ্র রায় ছিলেন সম্পাদক। পরের গল্প দুটো ‘চতুরঙ্গ’ এবং ‘মধ্যাহ্ন’ পত্রিকায় পাঠাই। ছাপা হয়। এর পর কয়েক বছর লেখা হয় না। চাকরির চেষ্টা, চাকরি পাওয়া, ছাড়া, আবার চেষ্টা...

                        ১৯৭৩-১৯৭৭ তেমন লিখিনি। গল্পের উপাদান চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়েছি শুধু। বাগবাজারের এক গলির ছেলের কাছে কত বড় পৃথিবীর কতগুলো জানলা খুলে গেল কয়েকটা বছরে। যাদব-কুর্মি-ভূমিহার ; ছাতু-লিট্টি ; লোন্ডা-ঝুমুর নিয়ে বিহার। পশ্চিমবাংলার গ্রামের গভীরে গিয়ে দেখলাম মাটির সঙ্গে মানুষের কী নিবিড় আর জটিল সম্পর্ক। অবাক হয়ে দেখি, ধানের ভিতরেও দুধ হয়। ধান-খাওয়া মাঠের ইঁদুর এবং ইঁদুর-খাওয়া মানুষের আহ্লাদ। হাঁড়ি-ভর্তি গাঁজলা-ওঠা তাড়ি ঘিরে গাঁজলা-মুখ মানুষের সান্ধ্য সঙ্গীত। অন্ধকারে আকন্দ-ধুঁধুল জোনাকিতে ভরে গিয়েছে। বাবুইয়ের বাসা দোলে দখিনা বাতাসে! আলো আর বুলবুলি খেলা করে। পটে আঁকা ছবিটির মতো ছোট্ট নদীটির চরে শিশুরা করে খেলা, নিজেদের ত্যাগ করা বিষ্ঠা থেকে কাঠির আগায় বের করে নেয় নিজের পেটের কৃমি, খেলা করে। শুখা নদীর বালি খুঁড়ে জল বের করাও দেখি। শুনি গো-রাখালের কথকতা। বুঝলাম রায়ত-আধিয়া-কোর্ফা-মুনিষ-মাহিন্দার। এ যেন এক বিস্ময়-বিহ্বল আবিষ্কার। আমার চোখে ক্রম-উন্মোচিত গ্রামবাংলাকে নিয়ে পর পর কয়েকটা গল্প লিখতে থাকি। খুব ছোট কাগজেই লিখতাম।

                        পদাবলী, কল্পবাণী, উত্তরকাল... বড় কাগজে লেখা না-পাঠানোর পক্ষে কোনও জুতসই যুক্তি আমার কাছে নেই। পবিত্র সরকার তখন শিকাগো থেকে ফিরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার পড়াচ্ছেন। উনিই সুরজিৎ ঘোষকে আমার কথা বলেন। আমি প্রমা-য় গল্প লিখি। প্রথম গল্পটি সম্ভবত ‘ভাল করে পড়গা ইস্কুলে’। তখন আমি হাওয়া অফিসে। এর কিছু আগে ‘ভূমি-ভূস্বামীর ভূত ও ভবিষ্যত’ নামে একটা প্রবন্ধ লিখেছিলাম একটা ছোট কাগজে। ভূমি-রাজস্ব দফতরে চাকরির প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতায় প্রবন্ধটি লেখা। নামকরণে বিনয় ঘোষের প্রভাব। প্রবন্ধটা পড়ে অনুষ্টুপ সম্পাদক অনিল আচার্য আমাকে ওঁর পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখতে বলেন। উনি তখনও আমার গল্প পড়েননি। আমি বলি, গল্পই তো লিখি, গল্প লিখতেই ভাল লাগে। উনি বলেছিলেন, তা হলে তা-ই দিন। ভাল লাগলে ছাপব। এর পর ছাপা হতে লাগল প্রমা এবং অনুষ্টুপে। আমার বেশ খাতির হতে লাগল— কারণ দুটো গণ্য করার মতো পত্রিকায় বছরে দুটো করে গল্প বেরচ্ছে। নান্দীকার-এর ঘরে একটা গল্প পড়া হয়েছে, অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় নাটক করার কথা ভাবছেন।

                      কফি হাউসে আসতেন সুরজিৎ ঘোষ। উনি ছিলেন ই়ঞ্জিনিয়ার। অসাধারণ স্মৃতিশক্তি ছিল। মুজতবা, বাদল সরকার, শঙ্খ-শক্তি-থার্মোডাইনামিক‌্স মুখস্থ বলে যেতেন। ওই আড্ডায় ১৯৮০ নাগাদ বললেন, বইও পাবলিশ করব প্রমা থেকে। বাছা বাছা বই বেরুবে।

                    তারপর কফি হাউসে এক দিন বললেন, স্বপ্নময়, দশ-বারোটা গল্প রেডি করো। তোমার একটা বই করব। সত্যি বলতে কী, বই করার বিলাসিতা ভাবিইনি। আমার চেনাজানা কেউ কেউ বই করেছিল। তাদের নিজেদের টাকা খরচ করে বই করতে হয়েছিল। প্রথমেই বলে নিলাম, টাকা? সুরজিৎ বললেন, তোমায় ভাবতে হবে না।
তত দিনে সতেরো-আঠেরোটা গল্প বেরিয়েছে। আমি দশটাই বাছলাম (বাকিগুলোর সন্ধান আমার কাছেও এখন আর নেই)। বেছে নেওয়া সব ক’টা গল্পই ছিল মাটির সঙ্গে জড়ানো মানুষদের নিয়ে। কৃষি মজুর, বর্গাচাষি, ভূমি সংস্কার করতে আসা সরকারি কর্মচারি, জোতদার, এরাই ছিল সব মুখ্য চরিত্রে। বইটার নাম দেব ভেবেছিলাম, ‘মা-মাটি-মানুষ’। একটি গল্পে, ভূমিহীনদের বিলি করা জমি কী ভাবে আবার পুরনো মালিকের কাছেই ফিরে যায়, সেই কাহিনি বলা ছিল। গল্পটার নাম ছিল ‘ভূমির নিত্যতা সূত্র’। পদার্থবিদ্যার ‘শক্তির নিত্যতা সূত্র’ মাথায় রেখে ওই নামকরণ, যে সূত্রের প্রতিপাদ্য হল, শক্তির বিনাশ নেই। সে কেবল রূপ পালটায়। শেষ পর্যন্ত বইটির নাম ‘ভূমি সূত্র’ রাখলাম। ভাগ্যিস নাম পালটেছিলাম। খরাক্লিষ্ট জমির ছবির ওপর, ভূমি সম্পর্কিত আইন ও ভূমি বিরোধের খবরের কাটিং কোলাজ করে একটি প্রচ্ছদ তৈরি করেছিলেন দেবব্রত রায়। প্রুফ দেখেছিলেন পবিত্র সরকার। বইটিতে কোনও ছাপার ভুল ছিল না। ১৯৮২ সালের বইমেলার মধ্যেই বইটি বেরিয়েছিল। মনে আছে, আবেগের বিহ্বলতা-জনিত কোনও থরোথরো অনুভূতি হয়নি। ব্যাগে করে দশটি বই নিয়ে এসেছিলাম বাড়িতে। মা বেঁচে নেই। বাবা এক বার দেখলেন, ব্যস। ক’দিন পরে সুরজিৎ ঘোষ জানালেন, মহাশ্বেতা দেবী বইটা পড়েছেন। কথা বলতে চাইছেন। তাড়াতাড়ি যাও। ওঁকে প্রথম দেখার অনুভূতি এখন থাক।

                                চার বছরে প্রথম সংস্করণ শেষ হয়েছিল। পরে আরও দুটো সংস্করণ হয়। এখন বইটি পাওয়া যায় না। বই আর বউ একই সময় হয়েছিল আমার। বইটি যখন সদ্যপ্রকাশিত, আমিও সদ্যবিবাহিত। একটা কপি রাষ্ট্রপতির পুরস্কার পাওয়া আমার হেডমাস্টার শ্বশুরমশাইকে দিয়েছিলাম। ক’দিন পর উনি বইটা ফেরত দিয়ে বলেছিলেন, ‘পড়া গেল না।’ দেখলাম গল্প সংশোধন করেছেন। গু কেটে বিষ্ঠা, রাঁড় কেটে বিধবা। এক জায়গায় ছিল একটি বালক ‘বাগালি’ না করে স্কুলে যাচ্ছে বলে ওর বাবা ওকে বলছে, অ্যাঁঁড় ছিচে দুব।
কেটেছেন। কিন্তু বিকল্প শব্দ বসাতে পারেননি।

¤ পুরস্কার ও সম্মাননা :-

 ১) ২০০৫ সালে 'অবন্তীনগর' উপন্যাসের জন্যে 'বঙ্কিম পুরষ্কার' লাভ করেন।
২) তাঁর রচিত 'হলদে গোলাপ' উপন্যাসটি ২০১৫ (১৪২১ বঙ্গাব্দে) সালে 'আনন্দ পুরষ্কার'-এ সম্মানিত হয়।
৩) 'সর্বভারতীয় কথা পুরস্কার'-এ সম্মানিত হয়েছেন তিনি।
৪) 'মানিক স্মৃতি পুরস্কার'
৫) 'তারাশঙ্কর স্মৃতি পুরস্কার'
৬) 'গল্পমেলা পুরস্কার'
৭) 'ভারতব্যাস পুরস্কার'
৮) 'আনন্দ-স্নোসেম পুরস্কার'

                                 লেখালেখি ছাড়াও গণবিজ্ঞান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। স্বপ্নময় চক্রবর্তী এ সময়ের একজন প্রধান লেখক। তাঁর এখন বর্তমান বয়স ৬৭ বছর। তিনি এখনও অসামান্য খ্যাতির সঙ্গে লিখে চলেছেন।


¤ তথ্যঋণ :-
১) 'আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস' - শ্রীতপন কুমার চট্টোপাধ্যায়।
২) 'হেডমাস্টার শ্বশুর বললেন, পড়া গেল না' - স্বপ্নময় চক্রবর্তী। ['আনন্দবাজার' পত্রিকার 'রবিবাসীয়' বিভাগ]।
৩) ইন্টারনেটের কয়েকটি পেজ।



★আলোচক : সৌম্য মাইতি 
(ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র, কিংসটন কলেজ, মেছেদা, পূর্ব মেদিনীপুর)

★ মডারেটর -- সাকসেস বাংলা★

Share this