নবনীতা দেবসেন





¤ নবনীতা দেবসেন : রবীন্দ্র স্নেহধন্যা লেখিকা ¤
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
        (১৩ জানুয়ারি ১৯৩৮ - এখনও জীবিত)

¤ জন্ম ও জন্মস্থান :-
১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের ১৩ জানুয়ারী নবনীতা দেবসেন দক্ষিণ কলকাতায় হিন্দুস্থান পার্কে তাঁর বাবা-মা'র 'ভালবাসা' গৃহে জন্মগ্রহন করেন।

¤ পেশা :-
কবি, ঔপন্যাসিক, ছোটোগল্পকার, ভ্রমণ সাহিত্যিক, শিশু সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ।

¤ ব্যক্তিগত জীবন :-
নবনীতা দেবসেন দক্ষিণ কলকাতায় হিন্দুস্থান পার্কে তাঁর বাবা-মা'র 'ভালবাসা'(এখনো সেখানেই বসবাস করেন) গৃহে জন্মগ্রহন করেন। পিতা নরেন্দ্র দেব ও মাতা রাধারানী দেবী সেযুগের বিশিষ্ট কবি দম্পতি। ছেলেবেলায় এক বিশেষ সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশে তিনি বড় হয়েছেন। বাংলা ও ইংরেজি ছাড়া উনি হিন্দি, ওড়িয়া, অসমীয়া, ফরাসী, জার্মান, সংস্কৃত এবং হিব্রু ভাষাগুলি পড়তে পারেন। গোখলে মেমোরিয়াল গার্লস, লেডি ব্রেবোর্ণ ও প্রেসিডেন্সি কলেজ, যাদবপুর, হার্ভার্ড, ইণ্ডিয়ানা (ব্লুমিংটন) ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও গবেষণা করেছেন। ১৯৭৫-২০০২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপিকা ও বেশ কিছুকাল বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপেরও কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন। তাকে তুলনামূলক সাহিত্যের একজন বিশিষ্ট অথরিটি মানা হয়। যাদবপুরে তিনি কবি বুদ্ধদেব বসু ও সুধীন্দ্রনাথ দত্তের স্নেহধন্য ছাত্রী ছিলেন।

¤ দাম্পত্য জীবন ও সন্তান :-
১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে তিনি বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ (পরবর্তীকালে নোবেলজয়ী) অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে (১৯৫৮-১৯৭৬) আবদ্ধ হন ও তাদের দুই কন্যা সন্তান জন্ম হয়। ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। জ্যেষ্ঠা অন্তরা সেন সাংবাদিক ও সম্পাদক এবং কনিষ্ঠা নন্দনা সেন অভিনেত্রী ও সমাজকর্মী।

¤ কবি-পরিচিতি :-
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা নবনীতা লেখিকা হিসাবেই বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্রের স্নেহধন্যা রাধারানী দেবীর কন্যা নবনীতা। এই নামটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরেরই দেওয়া। নবনীতা দেবসেন বলেছেন, ---
                 'এক কবির গর্ভে আরেক কবির ঔরসে আমার জন্ম। অক্ষরের জগৎটাই যার ভিটে-মাটি, ঘর-সংসার, সে আর কবিতা লিখবে না কেন!
                 যেমন আমার গাছে-চড়া, বৃষ্টিতে ভেজা, কাগজের নৌকা গড়া, তেমনিই আমার কবিতা লেখা। কবিতা আমার জীবনে আক্ষরিক অর্থেই সহজ। একা বাড়ির একলা শিশু, কবিতা আমার স্বভাব-সঙ্গী। অশৈশব।' ('প্রথম প্রত্যয়')

 ¤ কবিতা বিজড়িত জীবন-কাহিনী :-
নবনীতার জীবনে মধ্যবর্তী বলে কোনো কথা নেই। 'সবই তুমুল, সবই তীব্র। তীব্র সুখ, তুমুল যন্ত্রণা।' নবনীতা প্রাবন্ধিক, কথাসাহিত্যিক হলেও কবিতার আয়নাতেই নিজেকে প্রথম দেখেছেন। কবি বলেছেন, 'বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতাকেও আমি ভয় করি না, আমার একটা ভয়, কবিতা যেন আমাকে শেষদিনেও পরিত্যাগ না করে। সে নিঃসঙ্গতা পক্ষাঘাতের মতো সে বড় ভয়ানক হবে। কবিতা আমার অভিমান, আমার প্রার্থনা, আর নিঃসঙ্গতা আমার সঙ্গ, আমার পূর্ণতা, আমার অতৃপ্তি। কবিতাই সত্য অর্থে সেই 'বিজন জীবন বিহারী'। জীবনের গহনে যে-বিজন জীবন সেখানে যে ছায়াময় অনুভবের গোপন সঞ্চার, তার অনুরণটুকুও স্বচ্ছন্দে ধরে ফেলতে যে পারে, সেই পরম ফাঁদের নাম কবিতা। শূন্য গগনবিহারী ভাবকে ভাষার মোহন মরণে বিদ্ধ করে ফেলতে জানে যে-বিচিত্র ছলনা, তারই নাম কবিতা। সেই কবিতাকে কখনোই অবসন্ন করে ফেলা যায় না, অন্তরাল থেকে তাকে বসন যুগিয়ে যান স্বয়ং মহাকাল - কোনো দুঃশাসন কবি-সমালোচকের সাধ্য নেই যে সত্যিকারের কবিতাকে, আর জন্মসূত্র থেকে সম্পূর্ণ জন্মাচিত করে শেষ কথাটি বলে দেয়।'

¤ কর্মজীবন :-
ছোটোবেলা থেকেই এক-একটা শব্দ ভীষণভাবে আকর্ষণ করে 'দেখা না-দেখার নেশা' বোধের অতীতলোকে পৌঁছে যেতো, সংগীতের মতো ছড়িয়ে পড়তো। এম. এ পড়ার সময় অমিয় চক্রবর্তী, প্রণবেন্দু দাশগুপ্তকে বন্ধু হিসাবে পান। তেরো-চোদ্দ বছর বয়সে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্য শিখিয়েছেন সুদ্ধসত্ত্ব বসু। সুদ্ধসত্ত্ব বসুর উৎসাহে 'একক' পত্রিকায় তিনি কবিতা লিখেছেন। বুদ্ধদেব বসু, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত, নরেশ গুহ, অলোকরঞ্জন দাশগুপ্তের কাছে ইংরেজি ও বাংলা সাহিত্যের ক্লাস করেছেন। আমেরিকায় অমিয় চক্রবর্তীর কাছে পড়েছেন।

¤ সাহিত্যিক জীবন :-
কাব্যগ্রন্থ, ছোটোগল্প, প্রবন্ধ, রম্যরচনা, ভ্রমণ কাহিনী ও উপন্যাস মিলে তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ৮০-এর মতো। নবনীতার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'প্রথম প্রত্যয়' (১৯৫৯) অমিয় চক্রবর্তী, প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের আগ্রহে প্রকাশিত হয় 'দেশ' পত্রিকায়। বারো বছর পর বেরোয় তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ 'স্বাগত দেবদূত' (১৯৬১) প্রকাশিত হয় প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, অমিয় চক্রবর্তীর আগ্রহেই। তাঁর প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস 'আমি অনুপম' ১৯৭৬  খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। প্রেসিডেন্সিতে পড়ার সময় বিষ্ণু দের বড়ো মেয়ে ইরাকে পেয়েছিলেন বান্ধবী হিসাবে। বুদ্ধদেব বসুর ছোটো মেয়ে রুমি ছিল তাঁর পাড়ার বন্ধু। রুমির চেষ্টায় নবনীতার কবিতা চলে যায় বুদ্ধদেব বসুর কাছে এবং তা 'কবিতা' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। 'দেশ' পত্রিকায় অবশ্য তার আগেই তাঁর কবিতা প্রকাশিত হয়েছে। লিখেছেন 'পূর্বাশা', 'উত্তরা', 'শতভিষা' ইত্যাদি পত্রিকাতেও। তাঁর বাবাই তাঁকে পদ্য রচনা শিখিয়েছেন। মা রাধারানী দেবীর 'অপরাজিতা দেবী' ছদ্মনামে লেখা কবিতা পড়ে শিখেছেন 'লঘু স্বরে গভীর কথা বলা।' নবনীতা বলেছেন, ---
                                'কবিতা মানেই যুদ্ধ। নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে যখন বিজয় এবং শান্তি, মাত্র তখনই প্রস্তুত হয় কবিতা। বুদ্ধের মধ্যে গুহায়িত হয়ে থাকে সেই কবিতা, প্রায় সে প্রঞ্জার স্বগোত্র সেখানে। কিন্তু প্রঞ্জাকে জীবন গুটি পাকিয়ে অনেক সময়ে আমাদের আঁচলে ছুঁড়েও দেয়। কবিতাকে নৈব নৈবচ। কবিতা তোমার শসীদৃক্ষ থেকে আনা অস্ত্রের পরীক্ষা নেয়। কবিতাকে অর্জন করে নিতে হয়।'

¤ কবিতা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি :-
নবনীতা যখন কবিতা লিখতে শুরু করেছিলেন, তখন আধুনিক কবিতা লিখতেন যে তিনজন মেয়ে তাঁরা হলেন - রাজলক্ষ্মী দেবী, হেনা হালদার ও কবিতা সিংহ। এরপর কিছুদিন লিখেছেন শিপ্রা ঘোষ। ষাটের দশকে আবির্ভাব ঘটে বিজয়া মুখোপাধ্যায়ের। কবির কাছে কবিতা জীবনের আয়না। নবনীতার কথা দিয়ে বলা যায় ---
            'কবিতা তো দর্পন, দেখতে জানলে ভালো কবিতায় জীবনের ছবি সম্পূর্ণই খুঁজে পাওয়া যাবে। সৎ কবিতা হলো টাইম ক্যাপসুল। তারমধ্যে অতি সংক্ষিপ্তসারে কবির অন্তর-বাহিরের সবটুকুই গুছিয়ে তোলা থাকে। সিসমোগ্রাফ যন্ত্রের মতো কবিতায় ধরা পড়ে যায় পারিপার্শ্বিক সূক্ষ্মতম কম্পনও - ইতিহাস, দর্শন, সমাজ, ধর্ম, মানুষের জীবন সত্য। তার জন্যে কবিকে আলাদা করে চেষ্টা করতে হয় না। একটা একটা কবিতায় নয়, কবির সমগ্র কবিতা থেকে এই সামগ্রিক ছবি ঠিক উঠে আসবে।'
             তাঁর এখন বর্তমান বয়স ৮০ বছর। তিনি এখনও অনেক পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করেন।

¤ লেখার বৈশিষ্ট্য :-
১) বহুদর্শিতা।
২) কৌতুক-প্রবণতা।
৩) অন্তরঙ্গ রচনাভঙ্গি।
     
¤ কাব্যগ্রন্থ :-
মূলত কাব্যগ্রন্থ ও উপন্যাস রচনার মধ্যদিয়েই তিনি সাহিত্যজগতে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল :-
১) 'প্রথম প্রত্যয়' (১৯৫৯)
২) 'স্বাগত দেবদূত' (১৯৬১)
৩) 'তিন ভুবনের পারে'
৪) 'নারী তুমি অর্ধেক আকাশ'
৫) 'ভালোবাসা কারে কয়'
৬) 'মেদেয়া এবং'
৭) 'সাত কন্যের দেশে'
৮) 'শ্রেষ্ঠ কবিতা'

            সাধারণ বিষয় তাঁর কবিতায় প্রকাশভঙ্গীর বৈশিষ্ট্যে অসাধারণ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে সবকিছু ছোটো হয়ে যাওয়ায় কবি 'একা' হয়ে বলেছেন 'কক্ষচ্যুত অনিকেত আমি'। পুরানের চাঁদ সদাগরকে নিয়ে লিখেছেন 'মনসামঙ্গল' কবিতা। গভীর জীবন উপলব্ধির কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেছেন -
        'আসল কথাটা আর জানা হয় নি।
        জেনেছি এদিক সেদিক, আশপাশ, ছালবাকল
        জেনেছি পূর্ব এবং পশ্চাৎ
        আসল কথাটিই কেবল জানা হয়নি।'

        সাহিত্যের সকল শাখায় বিরাজ করেছেন অধ্যাপক নবনীতা দেবসেন। নিঃসঙ্গতা, যান্ত্রিক সমাজের যন্ত্রণা, অতীতের স্মৃতিচারণা তাঁর কবিতায় পরিস্ফুট হয়েছে। 'আসল কথা' কবিতায় তিনি বলেছেন,
        'জেনেছি এদিক সেদিক, আশপাশ ছালবাকল
         জেনেছি পূর্ব এবং পশ্চাৎ
         আসল কথাটিই কেবল জানা হয়নি।'

¤ উল্লেখযোগ্য কবিতা :-
তাঁর এই কয়েকটি বিখ্যাত কবিতাগুলির নাম না বললেই তাঁর সম্পর্কে অনেকটা অজানাই রয়ে যায়। তাঁর কয়েকটি বিখ্যাত কবিতা হল :-
১) 'দ্বন্দ্ব'    
২) 'দ্বীপান্তরী'
৩) 'ধন্য দাদু'  
৪) 'স্বাগত দেবদূত'      
৫) 'উন্মথিত'    
৬) 'ছাড়পত্র'  
৭) 'বালভাষিতম্' (শ্রাবণ, ১৩৮৫ বঙ্গাব্দ)
৮) 'মাত্সর্য সঙ্গীত'  
৯) 'বল্মীক'    
১০) 'উচ্চারণ'      
১১) 'উল্টো-সোজা'  
১২) 'ভালোবাসা'  
১৩) 'ধ্বান্তারিং সর্বপাপঘ্নম্'    
১৪) 'দুই গৃহস্থ, পাগলা সেপাই'  

¤ উপন্যাস :-
কবিতা ছাড়া তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনী, রসরচনাও লিখেছেন। জগৎ ও জীবনের গভীর উপলব্ধিই নবনীতার কথাসাহিত্যের উৎস। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলি হল :-
১) 'আমি অনুপম' (১৯৭৬)
২) 'নটী নব-নীতা' / 'নব-নীতা' (১৯৯৬) [এটি একটি গদ্য-পদ্য মিশ্রিত রম্যরচনা]
৩) 'একটি দুপুর'
৪) 'স্বভূমি'
৫) 'হেমন্তলোক'
৬) 'শীত'
৭) 'শনি-রবি'
৮) 'দেশান্তর'
৯) 'ঠিকানা'

¤ ছোটোগল্প সংকলন :-
ছোটোগল্প রচনায় নবনীতা যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর স্মরণীয় ছোটোগল্প সংকলনগুলি হল :-
১) 'গল্পগুজব'
২) 'মঁসিয়ে হুলোর হলিডে' (১৯৮০)
৩) 'বসন মামা এবং অন্যান্য গল্প'
৪) 'পলাশপুরের পিকনিক'
৫) 'সীতা থেকে শুরু'
৬) 'ভালোবাসা কারে কয়'
৭) 'খগেনবাবুর পৃথিবী এবং অন্যান্য'
৮) 'নবনীতা দেবসেনের গল্পসমগ্র ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ'

                   কৌতুককর সরস বাগভঙ্গী ও হিউমার রস সৃষ্টিতে মুন্সীয়ানার পরিচয় দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে 'গদাধর উইমেন্স কলেজ', 'টাংরী কাবাব', 'প্রজেক্ট চর্মচটিকা', 'মঁসিয়ে হুলোর হলিডে' প্রভৃতি গল্পের নাম করা যেতে পারে।

¤ ভ্রমণ কাহিনীর সংকলন :-
তাঁর চিরকালের ভ্রমণ কাহিনীর সংকলনটি হল : 'কেদারনাথ'। এছাড়াও তাঁর আরেকটি বিখ্যাত ভ্রমণ কাহিনীর সংকলন হল : 'করুণা তোমার কোন পথ দিয়ে' (১৯৭৮)।

¤ আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ :-
তাঁর একটি বিখ্যাত আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ : 'নটী নব-নীতা' / 'নব-নীতা' (১৯৯৬) নামক গদ্য-পদ্য মিশ্রিত রম্যরচনা। এছাড়াও তাঁর দুটি আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থ 'স্বজন আকাশে' ও 'পরবাস' ভীষণ জনপ্রিয়।

¤ অনুবাদ গ্রন্থ :-
তাঁর আরেকটি উল্লখযোগ্য কাজ হল ষোড়ষ শতকের মহিলা কবি চন্দ্রাবতী রচিত 'রামায়ণ'-এর ইংরজী অনুবাদ।

¤ অন্যান্য গ্রন্থ / অন্যান্য রচনাবলী :-
১) 'অভিজ্ঞান'
২) 'অ্যালবাট্রস'
৩) 'হে পূর্ণ তব চরণের কাছে'
৪) 'প্রত্যয়'
৫) 'তুমি মনস্থির করো'
৬) 'ভ্রমণ সমগ্র ১ম ও ২য়'
৭) 'নবনীতার নোট বই'
৮) 'ফিনিক্স'
৯) 'ভালো-বাসার বারান্দা - ১ম ও ২য়'
১০) 'হৃদকমল'
১১) 'ভ্রমণের নবনীতা ১ম, ২য় ও ৩য়'
১২) 'চন্দ্রমল্লিকা এবং প্রাসঙ্গিক প্রবন্ধ'
১৩) 'স্বপ্ন কেনার সদাগর'
১৪) 'নাট্যরম্ভ'
১৫) 'রাগ অনুরাগ এবং অন্যান্য গল্প'
১৬) 'রঙ্কিণীর রাজ্যপট এবং অন্যান্য'
১৭) 'নানারসের ৯ টি উপন্যাস'
১৮) 'জলসাঘর ১ম ও ২য়'
১৯) 'উত্তমাশা অন্তরীপ এবং'
২০) 'রূপকথা সমগ্র'
২১) 'পাঁচটি উপন্যাস'
২২) 'দশটি উপন্যাস'
২৩) 'উড়াল'
২৪) 'একটি ইতিবাচক প্রেমকাহিনী'
২৫) 'দ্বিরাগমন'
২৬) 'ঘূর্ণি'
২৭) 'অপরাজিত রচনাবলী'
২৮) 'পাড়ি'
২৯) ট্রাকবাহনে ম্যাকমাহনে'
৩০) 'শব্দ পড়ে টাপুর টুপুর' [এটি একটি রম্যরচনা]

¤ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি :-
১) তাঁর সাহিত্যকর্মের ব্যাপ্তি বিশাল। সামাজিক, রাজনৈতিক, মনোবৈজ্ঞানিক ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। কবিতা, ছোটোগল্প, উপন্যাস, সাহিত্য-আলোচনা, প্রবন্ধ, একাঙ্ক নাটক, ভ্রমণ-বৃত্তান্ত, হাস্য-কৌতুক রচনা, অনুবাদ-সাহিত্য এবং শিশু-সাহিত্য নিয়ে তাঁর রচনার পরিধি বিপুল।

২) সামাজিক ও মনোবৈজ্ঞানিক বিষয়ের উপর তাঁর বিভিন্ন লেখা তাঁকে সাহিত্যজগতের এক বিশেষ আসনে উপবিষ্ট করিয়েছে। যেমন নকশালবাড়ী আন্দোলনে বুদ্ধিজীবিদের ভূমিকা নিয়ে লেখা 'আমি অনুপম' (১৯৯৬)।

৩) ভারতীয় ইংরেজী লেখকদের আইডেনটিটি ক্রাইসিস নিয়ে ১৯৭৭ সালের লেখা, দ্বিতীয় প্রজন্মের অনাবাসী ভারতীয়দের নিয়ে ১৯৮৫ সালের লেখা, এইডস নিয়ে ১৯৯৯ এবং ২০০২ সালে লেখা, সমকামিতা নিয়ে ১৯৯৫ সালের লেখা, শিশু-নির্যাতন নিয়ে লেখা প্রভৃতি তাঁর চিন্তার ব্যাপ্তির পরিচায়ক।

৪) তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও শরৎচন্দ্রে চট্টোপাধ্যায়ের পাশাপাশি বাগদেবী মা সরস্বতীরও আশীর্বাদধন্যা।

¤ উল্লেখযোগ্য পুরস্কার ও সম্মাননা :-
১) 'মহাদেবী ভার্মা পুরস্কার' (১৯৯২)
২) 'সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার' (১৯৯৯) : 'নটী নব-নীতা' / 'নব-নীতা' (১৯৯৬) নামক গদ্য-পদ্য মিশ্রিত আত্মজীবনী মূলক রম্যরচনার জন্য।
৩) 'পদ্মশ্রী' (২০০০)।
৪) 'কমল কুমার জাতীয় পুরষ্কার' (২০০৪)।
৫) 'গৌরী দেবী মেমোরিয়াল স্মৃতি পুরস্কার'।
৬) 'ভারতীয় ভাষা পরিষদ পুরস্কার'।
৭) 'হারমনি অ্যাওয়ার্ড'।
৮) 'রকফেলার ফাউন্ডেশন পুরস্কার'।
৯) ভাগলপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন 'শরৎ সম্মাননা'।
 ১০)বিদ্যাসাগর স্মৃতি পুরস্কার (২০০৬)

¤ তথ্যঋণ :-
১) 'আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস' - অধ্যাপক শ্রীতপন কুমার চট্টোপাধ্যায়।
২) 'সংসদ সাহিত্য সঙ্গী' (২০০৩) - শিশির কুমার দাস।
৩) ইন্টারনেটের কয়েকটি পেজ।



★তথ্যসংগ্রহে--- সৌম্য মাইতি(ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র, কিংসটন কলেজ, মেছেদা, পূর্ব মেদিনীপুর)★

★মডারেটর---Success Bangla★

Share this