* বসন্তরঞ্জন রায় ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড় গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন । তাঁর বাবার নাম রামনারায়ন রায়। তিনি পুরুলিয়া জেলা স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেও তিনি সারা জীবন বাংলা ভাষার সেবা করে গেছেন।
* তিনি ছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক ও ভাষাবিদ এবং বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের পুঁথিশালার প্রথম পণ্ডিত। অসাধাণ পাণ্ডিত্যের জন্য তিনি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে ' বিদ্বদ্বল্লভ' উপাধি লাভ করেন। বসন্তরঞ্জন গ্রাম থকে গ্রামান্তরে প্রাচীন পুঁথির সন্ধান চালিয়ে সারা জীবনে প্রায় আটশো পুঁথি সংগ্রহ করে সেগুলি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদকে দান করেন। তাঁর আবিষ্কৃত পুঁথি গুলির মধ্যে বড়ু চণ্ডীদাসের "শ্রীকৃষ্ণকীর্তন" পুঁথি আবিষ্কার তাঁর জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি। বিষ্ণুপুরের নিকট কঁকিল্যা গ্রামে ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে শ্রকৃষ্ণকীর্তন পুঁথিটির সন্ধান পান। ১৯১১ খ্রিস্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের জন্য গ্রন্থটি সংগৃহিত হয়। ১৯১৬ সালে তাঁরই সম্পাদনায় বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে পুথিটি প্রকাশিত হয়। আদ্যন্ত খণ্ডিত পুথিটির কোথাও নাম পাওয়া যায় নি। বসন্তরঞ্জন রায় ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’ নামে গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। বসন্তরঞ্জন জীবিত থাকাকালীন ‘শ্রীকৃষ্ণকীর্তন’-এর চারটি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। চতুর্থ সংস্করণের পরবর্তী সংস্করণগুলি তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত- কেবল নবম সংস্করণটি মদনমোহন কুমারের সম্পাদনায় প্রকাশিত। বাকি গুলি বসন্তরঞ্জন রায়ের নামেই প্রকাশিত। বসন্তরঞ্জন সম্পাদিত চতুর্থ সংস্করণটিই মুদ্রিত আকারে এখন দেখা যায়।
আলোচক: সুশান্ত কর্মকার
অ্যাডমিন, সাকসেস বাংলা।
সূত্র- 'সংসদ বাঙালী চরিতাভিধান'